আমি যেভাবে চেষ্টা করছি

আজ মঙ্গলবার (26/10/21)-এ 5 নং সংহতি ইস্কুলে পড়াতে গিয়ে শ্রেণী ভিত্তিক আলাদা আলাদা করে না পড়িয়ে একসাথে একটাই বিষয়ে নিয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে বোঝাপড়া করলাম। আজকে বাচ্চাদের উপস্থিতির সংখ্যা ছিল ১৪ জন। এর মধ্যে তিনজনকে পড়াচ্ছিল ৫ নং বস্তিরই ছেলে সুজয়। আমি বাকি ১১ জনকে নিয়ে বাংলা রিডিং কীভাবে পড়তে হয়, কোন শব্দের কী উচ্চারণ হয়, যুক্তাক্ষরগুলো কীভাবে আলাদা আলাদা দুটো বর্ণ যুক্ত হয়ে উচ্চারিত হচ্ছে বা বইতে যেভাবে লেখা আছে সেটাকে ভাঙলে আমরা আলাদা আলাদা কী কী বর্ণ পাচ্ছি সেইটাকে খুঁজে বার করা- এইসব নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।

এটা শুরু করার সময়, বর্ষা নামের একটি মেয়ে কিছু মনে পড়ায়, নাম ডাকার খাতাটা খুলে পিছন দিকের পাতায় কতকগুলো নামের তালিকা দেখালো আর বললো, ‘স্যার, আনন্দ স্যার, এইটা দেখতে বলেছে, আমরা যারা রিডিং পড়তে পারি না তাদের নাম লেখা আছে, আমার নামও আছে; আমিও পারি না পড়তে।” ঐ তালিকায় থাকা ৫-৬ জনের মধ্যে দু’একজনই আজকে উপস্থিত ছিল। তার মধ্যে একজন তো মাঝপথে পড়া ছেড়ে আজকে পালিয়েই গেলো। 

 যাই হোক, বাংলা রিডিং পড়তে পারে না, বানানের সমস্যা, যুক্তাক্ষর বুঝতে অসুবিধা, বর্ণ ঠিক মতো না চিনতে পারা, রিডিং পড়ে অর্থ বুঝতে না পারা-এই ধরনের সমস্যা আমাদের সবকটি সংহতি ইস্কুলের বাচ্চাদের মধ্যেই কম-বেশী আছে। তাই আজকের পড়ানোর অভিজ্ঞতাটা আর সকল সংহতি ইস্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাথে ভাগ করে নিচ্ছি, যদি কারও মনে হয় এটা কার্যকরী, তাহলে যাতে তারাও তাদের পড়ানোর কাজে এমনই কিছু পদ্ধতির মধ্য দিয়ে বাচ্চাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত এবং তার সমাধান করতে পারে। সংহতি ইস্কুলে আলাদা আলাদা শ্রেণীর বাচ্চারা আসে, তাতে করে একজন কি দুজন টীচারের পক্ষে একসাথে ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণীর ভিন্ন ভিন্ন বিষয় পড়ানোটা চাপের হয়! পিছিয়ে পড়া যারা তাদের খামতিগুলো মেটাতে একসাথে সবাইকে একটাই বিষয় পড়ানোটা সুবিধে, যাদের সমস্যাগুলোও এক। কিন্তু গতানুগতিক পড়াশোনা, স্কুলের বই ধরে ধরে পড়ানোর ঝামেলা-ঝক্কিতে আর সুযোগই পাওয়া যায় না এমন একটা ক্লাস করার, যেখানে একটা বিষয়ের ওপর ফোকাস করে পিছিয়ে পড়াদের একটু এগিয়ে নেওয়া যাবে! 

এই সমস্যা আমারও হয়, এই চাপ আমিও খাই। কিন্তু এইসব সমস্যা, চাপের মধ্যেই নিজেকে সুযোগ খুঁজে নিতে হবে, সময় বার করে নিতে হবে।

আজকে ৫ নম্বর বস্তিতে পড়াতে গিয়ে দেখলাম ক্লাস 7 থেকে 9-10- এর ছাত্র-ছাত্রীদের কেউই আসেনি। যারা এসেছে তারা ক্লাস 2 থেকে 6 এর মধ্যে কিন্তু এদের সকলেরই সমস্যাটা একইরকম। সমস্যাটা কী? এদের কেউই ঠিক মতো বাংলা পড়তে পারে না, যেটাকে আমরা অনেকেই রিডিং পড়তে পারে না বলে চিহ্নিত করি। তাই আজকে আমি শ্রেণী ভিত্তিক না পড়িয়ে একই সমস্যাযুক্ত বাচ্চাদের একসাথে রিডিং পড়ানো, বানান শিক্ষা দেওয়ার ক্লাস শুরু করলাম। যদিও রিডিং পড়ার অনেকগুলো রকমফের আছে। আজকে পড়াতে পড়াতে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। কেউ কেউ বর্ণের সাথে আ-কার, হ্রস্ব-ই কার উচ্চারণ করে ধরে ধরে বানান করে একটা শব্দ উচ্চারণ করতে পারে,( পড়াটা খানিকটা এমন হয়- এ, ত-এ ও-কারে তো, য়-এ আ-কারে য়া — ‘এতোয়া’, ম- এ হ্রস্বু কারে মু, দন্তন ন এ ড এ আ কারে –‘মুন্ডা’, ‘র’ মুন্ডার, ক এ আ-কারে কা, হ এ হোস্সি কারে হি, নএ দীর্ঘীকারে নী– ‘কাহিনী’) তারপর একটা, তারপর আরেকটা- এইভাবে পড়তে পড়তে সে আগের শব্দটা কী পড়েছিল সেটাই ভুলে যায়, তাই গোটা একটা বাক্য ঐভাবে পড়ে শেষ করার পর, কী তার অর্থ দাঁড়ালো সেটাই বুঝে উঠতে পারে না। কেউ কেউ আবার এইভাবেও পড়তে পারে না, বর্ণগুলোই চিনতে পারে না, যে কারণে শব্দ গঠনে তাদের অসুবিধা হয়। কেউ কেউ আবার আ-কার, হ্রস্বি- কার মুখে উচ্চারণ না করেই একেবারে একটা গোটা শব্দ উচারণ করে ফেলে। এইভাবে পর পর শব্দ পড়ে পড়ে গোটা একটা বাক্য পড়তে পারে। এরা আগের দেওয়া দুটো উদাহরণের বাচ্চাদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। এরা এইভাবে পড়ে একটা সম্পূর্ণ বাক্যের অর্থটা কী দাঁড়ালো একটু হলেও ধারণা করতে পারে বা বুঝতে পারে। 

 আজকে ৫ নং বস্তির সংহতি ইস্কুলের বাচ্চাদের পড়াতে গিয়ে উপরের উদাহরণগুলোর মধ্যে একটি বাচ্চাকেই( সঙ্গীতা নস্কর- ক্লাস- 6) পেলাম যে আ-কার, হ্রস্ব-ই কার উচ্চারণ করে করে নয় বা বর্ণ ধরে ধরে নয়, একেবারে একটা শব্দ উচ্চারণ করতে পারছে, এরকম পর পর শব্দ পড়ে সম্পূর্ণ একটা বাক্য পড়তে পারছে দাঁড়ি, কমা সহ। কমার জায়গায় অল্প থেমে, পূর্ণচ্ছেদ বা দাঁড়ির জায়গায় সম্পূর্ণ থেমে বাক্যগুলো পড়ছিল মেয়েটি। এইভাবে পড়া দেখে বুঝতে পারলাম মেয়েটির যতিচিহ্নের অল্প-বিস্তর জ্ঞান আছে এবং গোটা একটা বাক্য পড়ে তার অর্থটাও ধরতে পারছে বা বুঝতে পারছে। পরে শুনলাম মেয়েটির মা অল্প শিক্ষিত হলেও, মেয়েটিকে তার মা নিয়মিত কাছে নিয়ে পড়তে বসান, তার সাধ্য মতো মেয়েকে পড়াশোনায় সাহায্য করেন, দেখিয়ে দেন। তবে সবার ক্ষেত্রে তো এমনটা হয় না! তাদের কী হবে! তাদেরকেই আমাদের গাইড করতে হবে, তাদের জন্য সহজ, সঠিক পদ্ধতি খুঁজে বার করতে হবে যাতে তাদের খামতিগুলো পূরণ করতে পারি। সঙ্গীতা ছাড়া, তিতলি ওঁরাও একেবারে ঠিকঠাক না হলেও অন্যান্যদের থেকে ধরে ধরে মোটামুটি পড়তে পারছে, আরেকটু ওর পিছনে সময় দিলেই ভালো পড়তে পারবে। ‘হিরণ সর্দার’ – এই ছেলেটির সমস্যাটা একটু অন্যরকম। ও ভালোই পড়তে পারে কিন্তু বানান যা লেখা আছে ও সেই মতো শব্দগুলো উচ্চারণ করে। যেমন ‘কচি’- এই শব্দটির উচ্চারণ করি আমরা কোচি। কিন্তু হিরণের যুক্তি কই কোচি তো লেখা নেই, লেখা আছে ক অ চি । যেখানে ‘করল’ লেখা আছে অর্থাৎ কোরলো সেটাকে ও পড়ছে করোল বা ক র ল -এইভাবে। খেলা থাকলে খ্যালা না বলে ও বলছে খেলা( হিন্দিভাষীদের মতো করে)। আরেকটি বাচ্চা সুদীপ নস্কর, বর্ণ বা শব্দের সাথে থাকা আ-কার হ্রস্ব-ই কার উচ্চারণ করার সময় এইভাবে পড়ছে- হ-এ আ-কারেতে হা, ত-এ হোস্সি- কারেতে তি তালব্য শ-এ আ-কারেতে শা – অর্থাৎ কারের সাথে তে ধ্বনিটা থাকবেই। মঙ্গল সর্দার নামের একটি বাচ্চার উ আর ই নিয়ে গণ্ডগোল! উ থাকলে ই পড়ছে। ‘তাতেই’ শব্দটা পড়তে গিয়ে ত এ আ-কার, ত এ কার হোস্সু বলে তারপর আবার গোটা শব্দটার উচ্চারণ ঠিকই বলছে- ‘তাতেই’। এর নাম নিয়ে কিছুক্ষণ নিজেদের মধ্যে হাসাহাসি, কথা কাটাকাটি হয়েছিলো। এখানে এই গদ্যটাতে যে এতোয়া নামের আদিবাসী ছেলেটির কথা আছে তার দাদুর নাম এখানে আছে মঙ্গল; তাই বদমাশগুলো ওর পিছনে লাগা শুরু করে দিল, “এ মঙ্গল, এতোয়া তোর নাতি? তুই আদিবাসী দাদু?” মঙ্গলও কম যায় না, ও বলে দিল, দেখেছিস বে আমার নাম বইতে আছে, তোদের নাম আছে?” 

যে সব শব্দের বানানে চন্দ্রবিন্দু আছে, যেমন ‘চাঁদ’,

এই শব্দটি বানান করে পড়তে গিয়ে কেউ কেউ চন্দ্র বিন্দু উচ্চারণ করতে ভুলে যাচ্ছে, কেউ কেউ আবার বুঝতে পারছে না চন্দ্রবিন্দু আগে উচ্চারণ করবে না চ আগে উচ্চারণ করবে, অনেকেই পড়ছে, চ-এ আ-কারে চন্দ্রবিন্দু দ, আসলে যেটা পড়তে হবে চ-এ চন্দ্রবিন্দু আ-কার, দ- চাঁদ।

যাই হোক, তালে কী দাঁড়ালো? একইরকম সমস্যা আছে, এমন পিছিয়ে পড়াদের নিয়ে একসাথে বাংলা পড়া বা রিডিং পড়াটা শিখবো কিন্তু এখন দেখছি সমস্যার ভিতরে আরও সমস্যা। সেখানেও দেখছি ভিন্নতা, কম- বেশীর পার্থক্য। 

আসলে আমাদের এই সমস্যা বা ত্রুটিগুলোকেই চিনতে হবে, বাছতে হবে একইরকম সমস্যা আর কোন কোন বাচ্চার আছে। সমস্যা যেমন আছে তার সমাধানও আছে। খুঁজতে হবে সেই সমাধানগুলোকে। এই খুঁজতে গিয়েই আমাদেরও অনেক কিছু শেখা হয়ে যাবে। এক একটি বাচ্চার সমস্যা আবার তার মতো করে আলাদা, যাকে কোনো ক্যাটাগরিতেই ফেলা যায় না। তার সমাধানও খুঁজতে হবে তার মতো করে। তাকে সময় দিতে হবে, সমস্যার গভীরে নেমে সমাধানের পথ খুঁজে বার করতে হবে। 

তো যাই হোক, এইদিন সবাইকে একসাথে রিডিং পড়াতে গিয়ে সমস্যাটা যেটা হচ্ছিল, আলাদা আলাদা ক্লাস, আলাদা আলাদা বই ; তাই পড়ানোর সুবিধার্থে যে কোনো একটা ক্লাসের বাংলা বই দিয়ে পড়ানো শুরু করলাম। হাতের সামনে পেলাম ‘ ‘পাতাবাহার’ – পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা পাঠ্য বই।

 

 এই বইটায় থাকা কোন্ গল্পটা দিয়ে পড়ানো শুরু করবো মানে রিডিং পড়াটা প্র্যাকটিস করবো ভাবছি, খুঁজছি। খুঁজতে খুঁজতে পেলাম, মহাশ্বেতা দেবীর লেখা ‘এতোয়া মুন্ডার কাহিনী’। এইটাই বেছে নিলাম একসাথে পড়বার জন্য।

  

এইটাই বেছে নিলাম কারণ, এইটা রিডিং পড়াটা প্র্যাকটিস করার পর এর পাশাপাশি আদিবাসী সাঁওতাল, মুন্ডাদের সম্পর্কে, ইংরেজ, জমিদারদের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই- বিদ্রোহ সম্পর্কে গল্প বলা যাবে বলে। এই গদ্যটা পড়তে গিয়েই একটা বাচ্চা তার অপরিচিত একটা শব্দ পেয়ে প্রশ্ন করেছে- ‘ উলগুলান কী স্যার? আরেক জন প্রশ্ন করলো ‘হুল’ কী স্যার? তখনকার মতো ওদের থামিয়ে রিডিং পড়াটা কনটিউ করলাম নইলে ব্যাঘাত ঘটবে মাঝখানে গল্প বসতে বললে। পরে অবশ্য এই রিডিং পড়াটা শেষ করে ওদের প্রশ্নের উত্তর দিলাম, ওদের মতো করে। ইতিহাসের গল্পগুলোও শোনালাম, টুকরো টুকরো কিছু গল্প। তাছাড়া এই গদ্যটাতে এমন কিছু শব্দ আছে, যা ইতিহাসের সাথে জড়িয়ে এবং ব্যবহারিক শব্দ, যেগুলো মনের ভাব প্রকাশ করতে, কোনো কিছু লিখতে গেলে কাজে আসবে এবং অন্য কোনো গদ্য পড়তে গেলেও এই শব্দগুলো ফিরে ফিরে আসে। যেমন- গ্রাম, জমিদার, পূর্বপুরুষ, আইনকানুন, সরকার, জোরজুলুম, লেখাপড়া, বন, আদিবাসী, সাঁওতাল, মুন্ডা, যুদ্ধ, দেশ, বাংলা, বিহার, ওড়িশা, আসাম- এমনই কিছু শব্দ। তাই এটাকে রিডিং পড়াবার জন্য বেছে নিলাম। 

রিডিং পড়বার এই ক্লাসে আজকে উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীরা সবাই যে প্রথমেই উৎসাহ দেখালো বা পড়তে রাজী হলো এমন নয়। ওরা যে ভাবে পড়তে অভ্যস্ত, অর্থাৎ স্যার পড়িয়ে দেবে আমরা শুনবো, প্রশ্নের উত্তরগুলো স্যার খুঁজে বার করে দেবে আমরা লিখবো। এখন স্কুলগুলো ছুটি থাকায় স্কুলগুলো থেকে বিভিন্ন বিষয়ে যে model activity tusk গুলো বাচ্চাদের দেওয়া হয়েছে সেগুলো করতেই তাদের উৎসাহ বেশী। কেউ বললো স্যার আমাকে ইতিহাসের এই প্রশ্নগুলো লিখিয়ে দাও, কেউ বললো স্যার বাংলার এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাচ্ছি না বা লিখতে পারছি না, আপনি বলে দিন কী হবে! স্কুল থেকে দেওয়া এই tusk গুলো তো করতেই হবে, ওরা না পারলে দেখিয়েও দিতে হবে, সাহায্য করতে হবে। কিন্তু ওদের এই tusk গুলো করাতে গিয়ে দেখেছি, যে যে বিষয়ের অধ্যায়ের থেকে বা বাংলার কোনো গল্প, কবিতা থেকে প্রশ্নের উত্তর লিখতে দেওয়া হয়েছে, সেগুলো তাদের পড়াই হয়নি। জানেই না কোন অধ্যায় থেকে বা কবিতা, গল্প থেকে প্রশ্নটা দেওয়া হয়েছে। যে ছাত্র বা ছাত্রীটা কোনও গল্প পড়েনি বা অধ্যায়টা সম্পর্কে ধারণাই নেই, পরিচিত নয়, কখোনো শোনেইনি সেই বিষয়ে- সে কী করে সেখান থেকে তৈরী করা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বার করে প্রশ্নের মান অনুযায়ী গুছিয়ে লিখবে! আগে তাকে অধ্যায়টা পড়াতে হবে, গল্পটা পড়ে শোনাতে হবে বা ওরা নিজেরাই পড়বে, তাহলে ওরা নিজেরাই পাঠ্য বইগুলো থেকে উত্তর খুঁজে লিখতে পারবে। অথচ স্কুলগুলো থেকে নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে এই গুলো লিখে জমা দিতে বলা হয়। তার একটা তাড়া থাকে। বাচ্চারা তাই যে করে হোক, যার কাছ থেকে হোক, এইগুলোর উত্তর লিখিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে যাতে ঐ তারিখের মধ্যে জমা দিতে পারে। আমরা অনেকেই নিরুপায় হয়ে এই activity tusk গুলো বলে দিয়েছি, করিয়ে দিয়েছি। ওরা আমাদের কথা অনুযায়ী কপি করে গেছে। কিন্তু এই করে বাচ্চারা কোনও বিষয়টাই সঠিক ভাবে উপলব্ধি করতে পারছে না, শিখতে পারছে না। যখন ওদের বলা হচ্ছে প্রশের উত্তর লেখার আগে গল্পটা পড়ো, এই অধ্যায় থেকে প্রশ্নগুলো দিয়েছে এই অধ্যায়টা পড়ো, তাহলে নিজেরাই খুঁজে উত্তর লিখতে পারবে, তারপর লিখতে গিয়ে অসুবিধা হলে আমরা দেখিয়ে দেবো। ওদের তখন একটাই বায়না, তোমাকে পড়াতে হবে না, তুমি খুঁজে খুঁজে দেখিয়ে দাও কোথা থেকে কতটা লিখতে হবে, আমরা দেখে দেখে লিখে নেবো। পড়তে গেলে দেরী হয়ে যাবে, কাল-পরশুই জমা দিতে হবে।’ 

একে তো কোনও বিষয়ের কোনও চ্যাপ্টার ঠিক মতো পড়া নেই, তার সাথে বাংলাটাও ঠিক করে পড়তে পারে না অনেকেই- তারা এইসব প্রশ্নের উত্তর বা সমাধান করবে কীভাবে! 

যাই হোক আজকে, বাংলা রিডিং পড়ানো অভ্যাস করাবার আগে, কেন ওদের এই রিডিং পড়া প্র্যাকটিস করা জরুরী বা বাংলা ভাষাটাকে ভালোভাবে শেখাটা জরুরী, সেটা আগে বোঝাালাম। যে, আমরা যদি ঠিক মতো রিডিং না পড়তে পারি, বাংলাটা ঠিক মতো না জানি, তাহলে কোনও বিষয়ই ঠিক মতো বুঝতে পারবো না। ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান যাই পড়ি না কেন, কিচ্ছু বুঝতে পারবো না, কেননা সেগুলো পড়ে বোঝার মাধ্যম হিসেবে আমরা বাংলা ভাষাটাই ব্যাবহার করি। এই বিষয়গুলোর বইগুলো তো বাংলাতেই লেখা, তাই আমাদের বাংলা পড়তে পারাটা ভালো করে শিখতে হবে, রপ্ত করতে হবে। যাই হোক ওরা ওদের মতো করে বুঝলো, তারপর একসাথে রিডিং পড়া শুরু করলাম। ক্লাস ফাইভের দুটো পাঠ্য বই ছিলো – যেখানে এই, এতোয়া মুন্ডার কাহিনী গদ্যটা আছে। দুটো বই দিয়েই কাজ চালাতে হলো। গোল করে বসে দুটো বই দু জায়গায় রাখা হলো, মোটামুটি কয়েকজন যাতে দেখতে পারে। একজন একজন করে রিডিং পড়া শুরু করলো। একজন পড়বে বাকিরা শুনবে বা অন্য আরেকটা বইতে মেলাবে। কেউ একটা গোটা প্যারাগ্রাফ পড়ে ফেললো, তারপরেও সে আরও পড়তে চায়, কিন্তু উপায় নেই, তাকে থামিয়ে আরেকজনকে পড়ার সুযোগ করে দেওয়া হলো, কেউ পাঁচ-ছয় লাইন পড়লো, কেউ কেউ দুটো লাইন পড়েই হাফিয়ে গেল। এই রিডিং পড়া যখন চলছিল, তখন সবাই যে শান্ত হয়ে বসে শুনছিলো তা নয়, তাদের অনেকেই তাদের দুষ্টুমি, পেনসিল দিয়ে পাশের জনকে খোঁচা দেওয়া, আমার অন্যদিকে তাকিয়ে থাকা বা পড়ানোয় ব্যাস্ত থাকার সুযোগ নিয়ে একে অপরকে মাথায় চাঁটি মারা, এ ওর চুল ধরে টানা, নিজেদের মধ্যে কথা বলা, পড়ার মাঝে হঠাৎ উঠে চলে যাওয়া- এগুলোও ওরা করে যাচ্ছিল। এইসব সামলিয়েই পড়ানো চালিয়ে যাচ্ছিলাম। মাঝে মাঝে এতই ডিস্টার্ব করছিলো, মনে হচ্ছিল এখানেই আজকে থামিয়ে রেখে পালাই। শেষ পর্যন্ত আট জনকে দিয়েই এক পাতা পুরোটা রিডিং পড়ানো হলো। ঐ পাতা শেষ হয়ে গেলে আবার ঐ পাতারই প্রথম থেকে রিডিং পড়া বাকি তিনজনকে পড়ানো হলো। তারপর আমি নিজেই ঐ পাতাটাই দাঁড়ি, কমা মেনে, জিজ্ঞাসা চিহ্নের সুরে বা ঢঙে পড়ে শোনালাম। বললাম, দ্যাখ্ এইভাবে রিডিং পড়তে হয়, তোদেরকেও এইভাবে পড়াটা শিখতে হবে। ওরা যখন রিডিং পড়ছিল, পড়তে গিয়ে যেখানে যেখানে আটকিয়ে যাচ্ছিল বা ভুল পড়ছিলো সেইখানে ভুল শুধরে দিচ্ছিলাম, বানান করতে সাহায্য করছিলাম, বাকিরা কেউ শুনছিলো, কেউ শুনছিলো না। এইভাবে বইটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পড়া শেষ হলো, আমি রিডিং করে শোনালাম। তারপর উলগুলান, হুল কী, সেটা বললাম। সাঁওতাল, মুন্ডা বিদ্রোহের আংশিক ইতিহাস, গল্পের ছলে শোনালাম। এরা রিডিং ঠিক মতো না পড়তে পারলেও, দেখলাম এরা সকলেই অ, আ, ক, খ- র বর্ণমালার বর্ণগুলো মোটামুটি চেনে। তাই পড়তে গিয়ে খুব একটা অসুবিধা হচ্ছিল না। রোজ যদি পড়াটা অভ্যাস করে, কারও একজনের তত্ত্বাবধানে, তাহলে এরা বাংলা পড়াটা আয়ত্ত করতে পারবে।

 এইবার ওদেরকে বললাম, এই যে তোরা এতোয়া মুন্ডার কাহিনী-র প্রথম পাতাটা পড়লি – এইখানে পড়তে গিয়ে তো অনেকগুলো যুক্তাক্ষর পেয়েছিস? ওরা বললো হ্যাঁ। এরই মধ্যে যারা জানতো না, তারা জেনে গেছে দুটো বর্ণ যেখানে জড়াজড়ি করে আছে, সেগুলোকেই যুক্তাক্ষর বলে। ওদেরকে বললাম, তোরা ঐ পাতা থেকে একটা করে যুক্তাক্ষর খুঁজে আমাকে বলবি, তারপর আমি সেটা বোর্ডে লিখে ভেঙে দেখাবো বা তোরাই বলবি কোন্ কোন্ বর্ণ জড়াজড়ি করে আছে। ওরা একে একে খুঁজে খুঁজে বললো, আমি বোর্ডে লিখলাম।

 

কেউ বললো যুদ্ধ – ভেঙে দেখালাম- য+উ+দ্+ধ। কেউ বললো- মুন্ডা। ওদেরই মধ্যে এই যুক্তাক্ষর ভেঙে ভেঙে বললো কী কী আছে। এরকম করে করে ডজন খানেক শব্দ নিয়ে আমরা ভাঙাভাঙি করলাম। ওদের উলুগুলান শব্দটা বোধ হয় মনে ধরেছিল বা ভাল্ লেগেছে, দাবী উঠলো, স্যার উলগুলান লিখুন, আমরা কী কী আছে উতে লিখে দিচ্ছি। যদিও শব্দটা যুক্তাক্ষর নয়, তবে আ-কার, হ্রস্ব-ই কার যোগে কীভাবে শব্দটা তৈরী হয়েছে, সেটাকে ভেঙে দেখানোই যায়। ওরা সেটাই করলো।

 

তারপর ওদের আরও কয়েকটা এরকম সহজ শব্দ দিলাম ওরা ব্যাঞ্জন ধ্বনি থেকে স্বর ধ্বনির চিহ্নগুলো অর্থাৎ া-কার মানে আ ধ্বনি, ী-কার মানে ঈ ধ্বনি এগুলো আলাদা করে দেখালো। ওদেরকে বাড়িতে এই শব্দগুলো নিয়ে আরেকবার নাড়াচাড়া করে দেখতে বললাম। পরেদিন আবার এই শব্দ গুলোই বোর্ডে লিখে ভেঙে ভেঙে দেখাতে হবে বললাম। এইভাবে আমাদের আজকে বাংলা রিডিং পড়ার ক্লাস শেষ হলো। অনেক্ষণ ধরে এই পড়া, লেখা, বকাঝকা করায় একঘেয়েমি লাগছিল। তাই ছুটি দেওয়ার আগে সবাই মিলে একটা গান শিখলাম, গান গাইলাম। আমার গানের গলা ভালো না, গান আমি গাইতে পারি না তবুও অন্তরা রায় চৌধুরির ‘এক যে ছিল দুষ্টু ছেলে, সারাটা দিন সে বেড়াতো খেলে…’- এই গানটার প্রথম কলিটা আমরা সুর ছাড়া প্রথমে আমি বললাম, আমাকে অনুসরণ করে ওরা বললো, তারপর একসাথে সুর দিয়ে গাইলাম। তারপর ছুটি হলো । হৈ হৈ করে, আনন্দের সঙ্গে যে যার বাড়ি চলে গেলো।

 আমি বলতে চাইছি, আমরা যারা সংহতি ইস্কুলে পড়াচ্ছি, বাচ্চাদের পড়াত গিয়ে যে যে সমস্যাগুলো দেখতে পাচ্ছি, সেগুলো আমার মতো এতো ডিটেইলসে লিখতে বলছি না। শুধু সমস্যা বা ত্রুটিগুলোকে চিহ্নিত করা এবং তার কী সমাধান করা যায়, কীভাবে শেখানো যায় সেইসব সূত্রগুলো যদি নিজেরাই একটু মাথা খাটিয়ে বার করতে পারি, মোকাবিলা করতে পারি, তাহলে অন্য কারও দ্বারস্থ হতে হয় না। নিজেরাই নিজেদের এইসব বিষয়ে দক্ষ করে তুলতে পারি। সেটা শুধু বাংলা নয়, অংক, ইংরেজী, বিজ্ঞান যে কোনো বিষয়ে যা যা সমস্যা হচ্ছে সেগুলো পয়েন্ট করে লিখে ফেলতে পারো। শুধু এটুকুই লেখা যাক সমস্যাটা কী আর তার সমাধান কী হতে পারে। ব্যাস।

 

 কীভাবে বাচ্চাদের বাংলা ভাষাটা শেখাতে পারবো? রিডিংটা ঠিক মতো যাতে পড়তে পারে সেটা কীভাবে শেখাবো? বানান সচেতনতার বিষয়ে কীভাবে শিক্ষা দেবো।? কমা, দাঁড়ির ব্যবহার কীভাবে শেখাবো? বর্ণ কীভাবে চেনাবো? শব্দ গঠন করা, কীভাবে শেখাবো? বাক্য গঠন করতে কীভাবে শেখাবো? পড়তে গিয়ে আ- কার হ্রস্ব-ই কারে গন্ডগোল পাকাচ্ছে, য় যেখানে সেখানে ই আর ই যেখানে সেখানে য় উচ্চারণ করছে-তাদেরকে কীভাবে বোঝাবো? 

এইগুলো যাদের প্রশ্ন। যারা আমরা খুঁজে বেড়াচ্ছি। কীভাবে কী করলে সহজে ভাষাটা শেখানো যায়, (এখানে আপাতত আমাদের বাংলা ভাষাটা শেখার ওপরই আমরা জোর দিচ্ছি) গড় গড় করে বাচ্চারা রিডিং পড়ে শুধু একটা বাক্য নয়, গোটা গদ্যটাই যাতে নিজে বুঝতে পারে। সেইরকম একটা শেখানোর সহজ উপায় তো আমরা চাইছি।

 

আমি বলতে চাই, আমরা নিজেরা মাথা খাটিয়ে সহজ সরল পদ্ধতি, উপায় খোঁজার পাশাপাশি 

সরকারি ইস্কুলের পাঠ্য বইগুলো যদি আমরা টীচাররা ভালোভাবে পড়ি, নিজেরাই একটু শিখি। পাঠ্য বইয়ের গল্প-কবিতা পড়ার কথা বলছি না। বাংলা পাঠ্য বইগুলোর প্রতিটি গল্প, কবিতার পরে সেই গল্প বা কবিতাটির ওপর অনুশীলন করার জন্য নানান ধরনের কৌশল, প্রশ্ন দেওয়া থাকে। সেগুলোকে আমরা টীচাররা নিজেরা আগে অনুধাবন করে যদি একরকম শিখতে পারি তাহলে বাচ্চাদেরকেও এইসব পাঠ্যবইয়ের অনুশীলনীতে থাকা Activities গুলো করিয়ে বাচ্চাদের বাংলা ভাষা চর্চায় সাহায্য করতে পারি।

যেমন- 

 

এরকম অনেক আছে। খুঁজে নিতে হবে। বাচ্চাদের ওদের পাঠ্য বই ধরেই এই কাজগুলো করিয়ে ওদের ভাষা শিক্ষায় উন্নতি ঘটানো যেতে পারে। সরকারি ইস্কুলের পাঠ্যবই-এর সিলেবাস, তার কিছু গল্প, কবিতা, শেখানোর কৌশল, পদ্ধতি- খুব একটা খারাপ নয়। সেগুলো থেকে আমরা শিক্ষা নিতেই পারি। সরকারি স্কুলের টীচাররা বেশীরভাগই এইসব বই Follow করেন না। এসব পড়াতে গেলে, বোঝাতে গেলে অনেক কষ্ট! তাই তো শহরের বস্তি অঞ্চলের গরীব ঘরের বাচ্চাদের এই অবস্থা! 

বইগুলোর PDF পাওয়া যাচ্ছে। সহজেই গুগল থেকে Download করে নেওয়া যায়। এখানে একটা link দিলাম https://www.studentscaring.com/west-bengal-board-class-5-book-pdf/

অনেক বাচ্চারা এমনকি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ে এমন বাচ্চারাও দেখেছি। বাংলা পড়তে এবং লিখতে গিয়ে যে শব্দের বানানে য় আছে সেখানে ই পড়ছে বা লিখছে আবার যেখানে ই আছে সেখানে য় লিখছে বা পড়ছে মানে তার উল্টোটা করছে। যেমন – চায় বললে চাই লিখবে বা পড়বে। “আমি খাই” না লিখে, লিখে ফেলছে ‘আমি খায়’। আবার “সে খায়” না লিখে লিখছে ‘সে খাই’। 

আসলে সমস্যাটা কী? 

 

এই সমস্যা যেসব শিক্ষার্থীদের, তাদেরকে এই পুরুষ বোঝানোর পাশাপাশি কিছু সমস্যার সমাধান করতে দিতে হবে। যেমন- 

  • শূন্যস্থানে সঠিক ক্রিয়াপদ ব্যবহার করো।

[ যাই, খাই, যায়, খায়, যাও, নাও, পায়, পাই, দিও]

 

আমি রোজ সকালে মাঠে_____। আমার সাথে সুজয় আর মালাও______। এক ঘন্টা পর মাঠ থেকে ফিরে এসে আমরা জল খাবার______। আমি সকালে জিলিপি দিয়ে রুটি_____। মালা সকালবেলা দুধ-রুটি____। সুজয়____ চা-বিস্কুট। 

খেতে খেতে সুজয় বললো আমি কালকে দোকানদারকে টাকা দিতে ভুলে গেছি। দোকানদার আমার কাছে কুড়ি টাকা____। সুজয়ের এক জায়গায় যাওয়ার তাড়া আছে, দোকানে ভিড় দেখে মালাকে বললো, তুমি এই টাকাটা___, দোকানদারকে দিয়ে___।

 

এরকমই কিছু।

 

এছাড়া পাঠ্য বইগুলোর পিছনে সরকারি ইস্কুলের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে এক কি দুপাতার শিখন পরামর্শ দেওয়া থাকে, সেগুলোও আমরা পড়ে দেখতে পারি।

তাছাড়া, একজন শিক্ষক  হিসেবে অনুসন্ধিৎসু, খোঁজকারী হতে হবে। শিক্ষার্থীকে শেখানোর জন্য সহজ-সরল পদ্ধতি বা উপায় কী আছে তার খোঁজ করতে হবে। শেখাবার আগ্রহ থাকলে আমরা যে কোনো সমস্যা সমাধানের সঠিক পন্থা ঠিক খুঁজে বার করতে পারবো। এখন মোবাইলের যুগ, প্রায় সবার কাছেই স্মার্ট ফোন আছে, সেটাকে আমরা নানানভাবে  কাজে লাগাতে পারি। কোনো বাচ্চাকে গুন, ভাগ শেখাতে অসুবিধে হচ্ছে বা ইংরেজীর গ্রামারের কোনো সমস্যা বোঝানো যাচ্ছে না, তার জন্য আমরা  youtube- এ ছড়িয়ে থাকা অনেক ভালো ভালো, tutorial vedio আছে সেগুলো থেকে আইডিয়া নিতে পারি, সেখান থেকে শিখে তারপর বাচ্চাকে শেখাতে পারি। তবে এ বিষয়ে ভুলভাল ভিডিও থেকে সতর্ক থাকতে হবে, নিজেকে যুক্তি দিয়ে বুঝতে হবে সেটা বাচ্চাকে শেখানোর জন্য ঠিক বা কার্করী কিনা! মাথায় রাখতে হবে কোনো বাচ্চাকে কোনো বিষয়ে পড়াতে গিয়ে যদি দেখি, বাচ্চাটা বুঝতে পারছে না, তার মানে এই নয় যে বাচ্চাটার অসুবিধে, আসলে আমরাই ঠিক মতো বোঝাতে পারছি না। আমরা শেখাতে গিয়ে ব্যর্থ। আমরা যে পদ্ধতিতে, যেভাবে বোঝাচ্ছি, বাচ্চাটা সেইভাবে বুঝতে পারছে না, অন্যভাবে বোঝালে হয়তো বুঝবে।

তার মতো করে বোঝানোর জন্য আমাদেরকেও তার মতো করে ভাবতে হবে। শিশুকে শেখাবার সময় শিশুর চিন্তা-ভাবনার উপযোগী স্তরে দাঁড়িয়ে ভাবতে হবে, শেখাতে হবে। ওরা তো আমাদের, বড়োদের সবসময় ভাবে বা চিন্তা করে না! তাই শিশুসুলভ Activies, Game, Movie, Story-র মাধ্যমে শিশুর কাছে পৌঁছাতে হবে। পড়াশোনা ওদের কাছে আনন্দের করে তুলতে হবে। তাহলেই আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে। 

 যাই হোক আমার এই পর্যবেক্ষণ, উপলব্ধি, পরামর্শ, পড়ানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে যা কিছু লিখেছি, পুরোটা পড়ে তোমাদের প্রতিক্রিয়া জানিও। 

 

Comments

2 responses to “আমি যেভাবে চেষ্টা করছি”

  1. Mark Avatar

    Thanks for your blog, nice to read. Do not stop.

  2. Esha Avatar
    Esha

    Khuub upokrito holam porey. Bachhader poratey giye ei samossya gulor sanmoukhin hochhi tai sottie khub upokar holo .

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *